অনলাইন ব্যবসায় সফল উদ্যোক্তা হওয়ার খুটিনাটি

ndicia24

এপ্রি ২৩, ২০২২ | জীবন গড়ি

Ended soon

পৃথিবী জুড়ে অনলাইন বা ই-কমার্স ব্যবসার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন ব্যবসা। ছোট-বড় যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নতুন উদ্যোক্তারাও ই-কমার্স ব্যবসায় জোড় দিচ্ছে। অবার যাদের স্বল্প পুঁজি তারা ব্যবসা ফেসবুক কেন্দ্রিক। বাংলাদেশের ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে ১৩০০। তবে সংগঠনটির হিসাবে, ফেসবুক ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক ই-কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে একজন সফল অনলাইন উদ্যোক্তা হতে হলে তাকে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।

প্রথমত যে কোনো ব্যবসা শুরুর আগে সঠিক পরিকল্পনা থাকতে হবে কি পন্য বা সেবার ব্যবসা করা যায়। উদ্যোক্তা হিসেবে কি পন্য বিক্রি করতে চান, সেটা কোথায় থেকে সংগ্রহ করা যাবে, পরবর্তী ধাপগুলো কি হবে, সে বিষয় গুলো আগে থেকেই পরিকল্পনা রাখতে হবে।

দিতীয়ত ধাপ হলো ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করা। কারন অনলাইনে এখন হাজার হাজার উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে টিকে থাকতে হলে, প্রতিযোগিতায় সফল হতে হলে ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করতে হবে।

তৃতীয় ধাপটি হলো আকর্ষণীয় একটি নাম নির্বাচন করা। ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে একটি সুন্দর নাম ঠিক করতে হবে, যাতে করে গ্রাহকদের কাছে তা সহজবোধ্য হয়। ফেসবুক হোক আর ওয়েবসাইট হোক- ই-কমার্সের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনলাইন জগতে আকর্ষণীয় নাম না হলে মনে রাখতে চায় না।

চতুর্থ পর্যায়ে ব্যবসা চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ হাতে নেয়া। সফল উদ্যোক্তাদের মতে, একেবারের শুরুর দিকে ফেসবুকে পাতা খুলে ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। কারণ এক্ষেত্রে বিনিয়োগ খুব কম লাগে। পরবর্তীতে ফেসবুকে পেজ খোলার পাশাপাশি ওয়েবসাইট তৈরি কাজটিও করা যায়।

আইনি নিবন্ধন বা ব্যবসার বৈধতার বিষয়টি পঞ্চম ধাপে এসে সম্পূর্ণ করে ফেলা ভালো। বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে যারা পণ্য বিক্রির ব্যবসা করছেন, তাদের বেশিরভাগেরই কোন আইনগত নিবন্ধন বা বৈধতা নেই। এমনকি ওয়েবসাইট খোলা, ওয়েবসাইটে ব্যবসা করা বা ই-কমার্সের ক্ষেত্রে দেশে এখনো কোন আইন নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও যারা ই-কমার্স ব্যবসায় স্থায়ী বা সফল হতে চান, তাদের উচিত অন্তত একটা ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা শুরু করা। তাহলে সেই ব্যবসার একটা আইনগত বৈধতা তৈরি হয়। পরবর্তীতে এ নিয়ে কোনো ঝামেলা তৈরি হয় না। নিজ এলাকার সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভায় সামান্য কিছু ফি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করা যেতে পারে।

ছয় নাম্বার ধাপে এসে ব্যাংক হিসাব বা আর্থিক পরিচিতি কাজটি সেরে ফেলা যায়। ট্রেড লাইসেন্সের পরেই প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যাংক হিসাব চালু করা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাহলে ব্যবসায়িক লেনদেন খুব সহজও স্বচ্ছ হয়। এখন বাংলাদেশেও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। ফলে এই সুবিধা নিতে হলে ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে।

সপ্তম ধাপে একজন ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তার মনে রাখতে হবে গ্রাহক সেবায় যেন কখনো ঘাটতি না থাকে। যেমন, পণ্য বা সেবা সঠিক সময়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্যে একটি শক্ত ডেলিভারি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। যাতে কালবিলম্ব না হয়। কালবিলম্ব হলে উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকের আস্থা অনেকখানি উঠে যায়।

অষ্টম ধাপে গ্রাহক সেবায় নিজেদের শক্তা অবস্থান তৈরি করতে হবে। পণ্য সরবরাহের পরে গ্রাহক সন্তুষ্টির বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। কারো যদি পণ্য নিয়ে আপত্তি থাকে, যে পণ্য বা ছবি, রঙ ইত্যাদি দেয়ার কথা, সেটা না হলে ভিন্ন কিছু হয়, তাহলে সেটা তাক্ষৎনিকভাবে ফেরত নেয়া, বিকল্প পণ্য বা মূল্য ফেরতের ব্যবস্থাগুলো থাকতে হবে। এরকম অভিযোগ তৈরি হলে সেটা যত তাড়াতাড়ি সমাধান করা মঙ্গল।

সর্বশেষ ধাপটি হলো ধৈর্য ধরা। ই-কমার্স অনেক বড় একটি জায়গা। এখানে নতুন কিছু নিয়ে এসে কেউ তাড়াতাড়ি সফলতা পেতে পারে, কিন্তু সবার সফলতা কিন্তু একবারে আসবে না। সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে ব্যবসায় টিকে থাকতে হবে। গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা গেলে একসময় সফলতা আসবে।

ফেসবুকে মন্তব‌্য করুন