Ended soon
দেশে দক্ষ জনবল তৈরি ও ফ্রিল্যান্সিং-এ ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে সরকারের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি ভাতা দিয়ে আগ্রহ তৈরী করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
প্রশিক্ষণের কারণ ও উদ্দেশ্যে
দক্ষ মানবসম্পদের উপর একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করে। দক্ষ জনশক্তি থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সহজেই আকৃষ্ট হন। তথ্যপ্রযুক্তিতে মানবসম্পদ তৈরিতে ২০০৭ সালে বেসিস প্রথম প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবল তৈরি করতে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া।
দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্ব দিয়ে ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ রূপকল্প ঘোষণা দেয় বেসিস। এই রূপকল্পের অন্যতম বিষয় হচ্ছে ১০ লাখ দক্ষ জনশক্তি তৈরি। জনশক্তি তৈরির এই কাজকে এগিয়ে নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইআইপি-SEIP) একটি অংশ বাস্তবায়ন করছে বেসিস। যার অর্থায়নে রয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও সুইস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এসডিসি)।
প্রশিক্ষণের বিষয়াদি
মোট ১৩টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্র্যাকটিক্যাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), ডিজিটাল মার্কেটিং, আইটি সাপোর্ট টেকনিক্যাল, কাস্টমার সাপোর্ট অ্যান্ড সার্ভিস ও আইটি সেলস বিষয়ে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, পিএইচপি, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট-ডটনেট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট-এনড্রয়েড, সার্ভার ম্যানেজমেন্ট ও ক্লাউড ম্যানেজমেন্ট, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও ই-কমার্স, ইংলিশ কমিউনিকেশন ও বিজনেস কমিউনিকেশন বিষয়ে তিন মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষণের সময়কাল
শিক্ষার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া পুরো বছরের জন্য চলমান থাকলেও বছরে চার (০৪) বার শিক্ষার্থীদের একটি স্বল্প স্বাক্ষাৎকার এর মাধ্যমে কোর্সে ভর্তি করানো হয়। ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বিডিবিএল ভবনে অবস্থিত বিআইটিএম ল্যাবে এসইআইপি প্রকল্পের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। দৈনিক তিনটি স্লটে (সকাল, বিকাল এবং সন্ধ্যা) এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। চাকুরীজীবি যে কেউ চাইলে সন্ধ্যার স্লট বাছাই করে এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় সপ্তাতে তিন দিন যথাক্রমে শনি, সোম, বুধ এবং রবি, মঙ্গল এবং বৃহঃ এ অনুপাতে।
মাসিক ভাতার পরিমাণ
কোন শিক্ষার্থী একমাসব্যাপী একটি কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলভাবে কোর্স শেষে ৩১৫০ টাকা এবং তিন মাসব্যাপী কোন কোর্সে অংশগ্রহণ করে মাসিক ৩১৫০ টাকা হারে মোট ৯৪৫০ টাকা ভাতা পাবেন। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে ৮০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে।
কতবার নেয়া যাবে এ প্রশিক্ষণ?
অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইআইপি-SEIP) এর আওতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। উল্লেখিত ১৩টি বিষয়ের উপর কেবলমাত্র ঢাকা এবং চট্রগ্রাম এ দুটি জেলায় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কোন শিক্ষার্থী যদি এসইআইপি-SEIP এর আওতায় দেশের অন্য কোন প্রশিক্ষণে পূর্বে অংশগ্রহণ কর থাকে তবে নতুন করে আর অংশগ্রহণ কিংবা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে না।
আবেদনের নিয়মাবলী
স্নাতক শেষ অথবা শেষের পর্যায়ে এমন যে কেউই এসইআইপি-SEIP প্রকল্পে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এজন্য তাঁকে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক ধাপ অতিক্রম করতে হবে। প্রথমে তাঁকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে (http://bitm.org.bd/seip) আবেদন করতে হবে। আগ্রহীরা একটি বিষয়কে প্রধান করে মোট তিনটি বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য মেইল এবং মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হবে। নির্দিষ্ট বিষয়ের মৌলিক ধারণা পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষকেরা মৌখিক পরীক্ষা নেন। যাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তাঁরাই পরবর্তীকালে ভর্তি হয়ে ক্লাস করার সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষণ শেষে সনদ ও কর্মসংস্থানে সহায়তা দেবে বেসিস-বিআইটিএম। যোগ্যতা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত বেসিসের সদস্যভুক্ত কোম্পানিগুলোতে পাঠানো হবে।
যোগাযোগ
এই কোর্সে অংশগ্রহণের জন্য (http://bitm.org.bd/seip) সাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এ ছাড়া বিস্তারিত জানার জন্য রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিডিবিএল ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত বিআইটিএম অফিসে গিয়ে সরাসরি জানা যাবে। ০৯৬১২৩৪২৪৮৬ নম্বরে ফোন করেও যোগাযোগ করা যাবে।