জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাইলে যা করতে হবে

ndicia24

এপ্রি ২৬, ২০২২ | জীবন গড়ি

Ended soon

জনসাধারণের সামাজিক সুবিধা ও অধিকার নিয়ে কাজ করত চাইলে এনজিও সেক্টরটি আপনার জন্যে । এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি নয়। তাই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবেই সবার কাছে পরিচিত। জাতীয় পর্যায়ের বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এনজিও সংগঠনে কাজ করতে চাইলে যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে যে কেউ দ্রুত এনজিও সংস্থায় নিজের কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলতে পারবেন।

১. নিজের মূল্যায়ন
শুরুতেই আপনি আপনার নিজেকে মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ কিছু সিদ্ধান্তের উপর আপনার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তাই আপনি কী কী চাচ্ছেন এবং কোথায় কাজ করতে ইচ্ছুক সেটা জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এনজিওতে পা বাড়ানোর পূর্বে এসব প্রশ্ন নিজেকে জিজ্ঞেস করুন।

আপনি কি সামাজিক বা সেবাধর্মী কাজ করতে পছন্দ করেন এবং এনজিওর লক্ষ্য পূরণের জন্য দীর্ঘ সময় কাজ করতে আগ্রহী ?

সমাজের উন্নয়নশীল কাজে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে অনেক আগে থেকেই, নাকি কিছুদিন ধরে এনজিও প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কথা ভাবছেন ?

নিজের ব্যক্তিগত সময় বিসর্জন দিয়ে যেকোনো মূহুর্তে বিশ্বের যেকোনো স্থানে আপনি কাজ করতে রাজি ?

প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা মানুষের মাধ্যমে হওয়া দুর্ঘটনায় নিজেকে সামলে দিয়ে পরিস্থিতি কতটা দ্রুত সামাল দিতে পারবেন ?

কাজের অত্যধিক চাপ কি সামাল দিতে পারবেন? ছুটিবিহীন দিনের পর দিন কাজ করতে কি আপনি ইচ্ছুক ?

২. দৃঢ়তা পোষণ
যখন এনজিওতে কর্মক্ষেত্রের বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্ত স্থির তখন কাজের বিষয়ে নিজের ইচ্ছে শক্তি মজবুত করা জরুরি। যেমন মানসিক ভাবে কাজের প্রচুর চাপ নেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি, আরাম প্রিয়তা থেকে বের হয়ে প্রফেশনালদের মতো কাজ করা, অল্প রিসোর্সের মধ্যে অধিক কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

৩. জ্ঞান বৃদ্ধি করা
প্রতিটি এনজিওর উদ্দেশ্যে আর কর্মপদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন। তাই আপনি যে এনজিওতে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক সেই সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। তারা কীভাবে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাদের উদ্দেশ্যে এবং কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিন। চাইলে উন্নয় অধ্যাপনার উপর মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে এধরনের প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে পারেন। এর ফলে সামাজিক, নাগরিকত্ব এবং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে গভীর জ্ঞান আপনি অর্জন করতে পারবেন। যা পরবর্তীতে এনজিওর ভালো পদে নিয়োগের জন্য সহায়তা করে থাকবে।

8. স্বোচ্ছায় কাজ করা

নিজের বাস্তবিক কাজের দক্ষাতা বৃদ্ধির জন্যে যে কোনো স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে স্বোচ্ছায় কাজ করা যেতে পাতে। স্বেচ্ছায় কাজের জন্যে অনেক প্রতিষ্ঠান কিছু দিন পর ৩ মাস বা ৬ মাসের জন্যে নতুনদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান গুলোর উদ্যেশ্য থাকে নতুন তরুণদের বাস্তবিক কাজের অবিজ্ঞতা দেয়া।

আরও পড়ুন: সাফল্যের জন্যে প্রয়োজন দক্ষতা

৫. স্থানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ-সুবিধা ভেবে দেখুন
এনজিওর শুরুর দিকে আপনাকে যেকোনো ধরনের কাজে যুক্ত হওয়া লাগতে পারে। কারণ অভিজ্ঞতা ছাড়া আপনি কখনোই স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক এনজিওতে কাজের সুযোগ পাবেন না। তাই শুরুতে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ বিবেচনা করে দেখুন।

৬. কোন ধরনের কাজে আপনি আগ্রহী সেটা বাছাই করুন
এই কাজের জন্য পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। এনজিওর বিভিন্ন ধরনের কাজের মধ্যে যখন আপনি নির্দিষ্ট সেক্টর বাছাই করে নেবেন, তখন চাকরির জন্য কোন কোন প্রতিষ্ঠানে চেষ্টা করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হয়ে উঠবে।

৭. প্রাতিষ্ঠানিক কাজ
এনজিওতে কাজ করা মানেই যে সর্বদা ফিল্ডে থাকতে হবে, এমন নয়। সাধারণত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মতো এনজিও সংগঠনকেও একই ভাবে কাজ করতে হয়। তাই এর অভ্যন্তরীণ কাজগুলোতে নিজের কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলার বিষয়টিও বিবেচনা করতে পারেন।

৮. যোগাযোগ
নিজের এনজিওতে তো অবশ্যই, সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের এনজিও এবং তাদের কর্মীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। যখন অন্যান্য এনজিওর কার্যবিধি সম্পর্কে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকবে, তখন আপনার এনজিওর একই ধরনের প্রকল্পের কাজ সম্পাদন করা আপনার জন্য সহজ হয়ে উঠবে। এছাড়া অনেকের সাথে যোগাযোগ থাকার ফলে অন্যান্য এনজিও সংগঠনে যদি লোকবলের প্রয়োজন হয়, সবার প্রথমে আপনার নাম চলে আসবে।

৯. কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি
আপনি যে ধরনের কর্মক্ষেত্র বাছাই করুন না কেন, সব স্থানেই কোনো না কোনো বিষয়ের উপর দক্ষতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এনজিও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কাজ করলেও এখানে কিছু বিষয়ে দক্ষতা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন, মানুষের চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ, কর্মক্ষেত্র সাজিয়ে নেওয়া এবং যথাযথ ম্যানেজমেন্ট, ইত্যাদি।

১০. ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি

আপনি যখন আন্তর্জাতিক কোন এনজিওতে কাজ করবেন, তখন আপনার ভাষাজ্ঞান সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। আর শুধু ইংরেজিতে দক্ষ থাকলেই হবেনা। কয়েক ধরনের ভাষায় কথা বলার জন্য বিভিন্ন কোর্সে সময় দিন। কারণ যখন বাইরের কোনো অনুন্নত দেশে আপনাকে পাঠানো হবে, তখন বেশির ভাগ সময় ইংরেজি কোনো কাজে আসবে না। তাই আন্তর্জাতিক এনজিওতে কাজ করতে চাইলে বিভিন্ন ভাষায় নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন।

ফেসবুকে মন্তব‌্য করুন