সাম্প্রদায়িকতা বর্তমান সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

মুকিত চৌধুরী
Member Association of Accounting Technician (AAT), London Award in Education and Training (AET), London Director CAPM Dhaka

নভে ৮, ২০২১ | সমসাময়িক

Ended soon

সাম্প্রদায়িকতা কি:

ধর্মীয় বহুত্ববাদ থেকে উঠে আসা মতাদর্শ, এবং এটি একটি সামাজিক বিপদ হিসাবে বিবেচিত। সাম্প্রদায়িকতাকে একটি হাতিয়ার হিসাবেও সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে, যা বিভিন্ন ধর্মের উপস্থিতিতে একটি রাজ্যে রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য উত্থাপিত হয়।

সাম্প্রদায়িকতার সাথে সংযুক্ত বিষয়গুলি কি?

১) এটি জাতীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকি
২) এটি রাজ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনার অনুঘটক
৩) এটি দেশের মানুষ, সম্প্রদায়ের গোষ্ঠী বা রাজ্যের গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজনের দিকে পরিচালিত করে
৪) এটি অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে একটি ধর্ম, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ইত্যাদির প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাথে যুক্ত
৫) এটি অন্যদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সক্রিয় শত্রুতা বা বিরোধিতা প্রায়ই সমাজে সমস্যা সৃষ্টি করে

সাম্প্রদায়িকতার প্রকারভেদ:

সাম্প্রদায়িকতা ধারণাটিকে সহজ করার জন্য, এটিকে তিনটি উপায়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়:-

১) রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা: রাজনীতির ক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য, নেতারা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের ধারণাকে পরোক্ষভাবে প্রচার করতে থাকে। এটি রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেয়, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ রাজনৈতিক লাইন এবং মতাদর্শে বিভক্ত।

২) অর্থনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা: সম্প্রদায়ের গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক স্বার্থে দ্বন্দ্বের ঘণ্টা বাজিয়ে নিজ অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে। যা সমাজে এই ধরণের সংঘর্ষের নেতৃত্ব দেয়, তাকে অর্থনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা বলা যেতে পারে।

৩) সামাজিক সাম্প্রদায়িকতা: যা সমাজের বিশ্বাসগুলো বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করে এবং একে অপরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে নিয়ে যায়, তখন এটি সামাজিক সাম্প্রদায়িকতার দিকে পরিচালিত করে।

সাম্প্রদায়িকতা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করে:

সাম্প্রদায়িকতা দীর্ঘদিন ধরে সমাজকে বিভক্ত করেছে। এটি গোঁড়া নীতি ও নীতির বিশ্বাস, অসহিষ্ণুতা, অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা, ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃতি এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণ।

আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক না। যেমন আমি না, টুটল না, সেলিম না, তনু না, শরীফ না, সুধাংসু না, মহসিন না, কালি শঙ্কর না, কলি না, শিপ্রা না, মূলত দেশে এমন কোন মুসলিম এবং হিন্দু নেই যার ঘনিষ্ঠ বিধর্মী বন্ধু নেই।

ইসরাইল প্যালেস্টাইনের মতো সম্পর্ক বাংলাদেশের এবং পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু মুসলমানের মাঝে না। বাহ্যিক ভাবে সাধারণ বাঙ্গালি হিন্দু, মুসলমানদের মাঝে পার্থক্য নেই, ধর্মীয় বিশ্বাস প্রত্যেকের প্রেরণা, তাঁর জীবন বিধান, তাহলে কেন এতো উত্তেজনা! সাধারণ হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে সামাজিক সাম্প্রদায়িকতা অনুপস্থিত ছিল সেই মোঘল আমল থেকেই, তবে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা শব্দটি ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত হয়েছিল, কারণ এটি বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তার উপনিবেশগুলিতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা এবং অন্যান্য সহিংসতা পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্র ছিলো।
তাহলে সাম্প্রদায়িক কে?
ধরিয়ে দিন।

ফেসবুকে মন্তব‌্য করুন