United Nations Framework Convention on Climate Change (UNFCCC) the Conference of the Parties (COP) বা কপ – ২৮ প্রেসিডেন্ট বললেন একটা আলাদা মজলিশ হবে যেখানে উচ্চ প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন, এই মজলিশে সৌদি আরবের বা তার জোটভুক্ত প্রতিনিধি দলের একজন প্রতিনিধি তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে,একটি কপ-২৮ চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎস বন্ধ করার প্রক্রিয়া বাছাই করা উচিত নয়, বরং এর পরিবর্তে সকলের কার্বন নির্গমন হ্রাসের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। এই প্রেক্ষিতে আইইএ (International Energy Agency)বলেছে যে বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন সফলভাবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত করার জন্য এই দশকের শেষ নাগাদ জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা এক চতুর্থাংশ কমাতে হবে, যা ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির আদর্শ লক্ষ্য। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইতোমধ্যে কমপক্ষে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ছোট দ্বীপ দেশগুলি সহ ৮০ টিরও বেশি দেশের একটি জোট কপ-২৮ এ একটি বাস্তবায়নযোগ্য চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছে যার মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিকে “পর্যায়ক্রমে বন্ধ” করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রধান উৎস। এই বক্তব্য টিকে একটা হুমকি মনে করে গত ৬ ডিসেম্বর ওপেক তাদের সদস্যদের এবং সমর্থকদের কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলো যেখানে বলা হয়েছে কপ -২৮ এর কোন চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানিকে বন্ধ করার কোন ধারা বা উপধারা থাকলে তার সরাসরি বিরোধিতা করার জন্য। কপ ২৮ এর শেষের দিকে এসে দেখা যাচ্ছে সেই জোট ভুক্ত কিছু কিছু দেশ এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিচ্ছে মানে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন অব্যাহত থাকুক। OPEC এর সবচেয়ে বড় উৎপাদক এবং ডি ফ্যাক্টো লিডার সৌদি আরব, রাশিয়া এবং অন্যান্যদের সাথে, এমন যুক্তি দিয়েছে যে কপ-২৮ এর মুল উদ্দেশ্য কার্বন নির্গমন হ্রাসের দিকে হওয়া উচিত, জ্বালানী উৎসগুলিকে বন্ধ করা লক্ষ্য হতে পারে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং কানাডা সহ প্রায় ১৩০ টি দেশ গত সপ্তাহে পুন-নবায়নণযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ করতে এবং তাদের শক্তির দক্ষতা দ্বিগুণ করতে সম্মত হয়েছে। সনদে স্বাক্ষরকারীরা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ করে কমপক্ষে ১১,০০০ গিগাওয়াটে এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত শক্তি ব্যাবহারের দক্ষতা হার দ্বিগুণ করে বছরে ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পরিকল্পনা গ্রহনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে । অন্যদিকে আরো আশা ব্যাঞ্জক হচ্ছে ৫০ টি জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানি – যা বিশ্বব্যাপী তেল ও গ্যাস উৎপাদনের প্রায় এক তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত গ্যাস ও মিথেন নির্গমনের সমস্থ পথগুলো রোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে এই ৫০টি তেল ও গ্যাস কোম্পানি কপ -২৮ প্রেসিডেন্ট সুলতান আল-জাবেরের বৈশ্বিক ডিকার্বনাইজেশন চার্টার ও মিথেন হ্রাসের অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেছে। এই প্রেক্ষিতে আইইএ এনালাইসিস করে দেখেছে নতুন বৈশ্বিক ডিকার্বনাইজেশন জোটের পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন বর্তমান উষ্ণতার গতিপথ এবং ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ সীমিত করার প্রক্রিয়াকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ অগ্রগামি করবে।
বিশ্বের বেশিরভাগ বৃহত্তম অর্থনীতি ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-শূন্য কার্বন নির্গমন ভারসাম্য অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং উদ্ভাবন, বিনিয়োগ এবং প্রণোদনার মাধ্যমে ইতিমধ্যে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২০ বছরে দক্ষতার উন্নতির পাশাপাশি কয়লা থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পুননবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে মাধ্যমে কার্বন নির্গমন প্রায় ৪০% কমিয়েছে। চীনের শীর্ষ জলবায়ু দূত, জি জেনহুয়া, শনিবার বলেছেন যে কপ ২৮ চুক্তিকে কেবলমাত্র সাফল্য হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে যদি এতে জীবাশ্ম জ্বালানির একটি চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে – যদিও তিনি বলেননি যে বেইজিং একটি জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ বা “ফেজ-আউট” চুক্তিকে সমর্থন করবে কিনা। চীনের অবস্থানের সাথে ভারত , ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া ও আরও কয়েকটি দেশ একি অবস্থান দেখিয়েছে। ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতিমধ্যে, তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে যে জীবাশ্ম জ্বালানীর ফেজ আউট জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে যেকোনো চুক্তির একটি অপরিহার্য উপাদান।
খুব অল্প কয়েকজন (হতে পারে ১%) যখন রুমের ভেতর বসে এসব ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলছিল, তখন বাইরে ৯৯% মানুষ ক্লাইমেট জাস্টিস, ক্লাইমেট ক্রাইসিস, লস অ্যান্ড ড্যামেজ, ক্লাইমেট রিফিউজি, আডাপ্টটেশন ফান্ড, ক্ষতিপুরন বাজেট ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গল্প, উপন্যাস, ছড়া, কবিতা, গান, গীতিকবিতা, ইত্যাদি নিয়ে ব্যাস্ত ছিল। এই দু গ্রুপের মধ্যে মেল বন্ধন কোথায় কিভাবে হবে এটা ভাবার বিষয় কারন দুই গ্রুপের মতাদর্শ ভিন্ন। যেমন এক পক্ষ বলছে বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী দেশ গুলো কে ক্ষতিপুরন দিতে হবে । সেই দেশগুলি বলছে তারা তাদের আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে কার্বন নিঃসরণ করেছে , জলবায়ুর ক্ষতি কি তারা তখন বুঝেনি … আরেক গ্রুপ বলছে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের জন্য দায়ী দেশগুলি বেশি ক্ষতিপুরণ দিবে, আবার তাদের কাউন্টারে কথা তুলছে ১৯৫০ পরবর্তী যে শিল্পায়ন হয়েছে সেসব শিল্পোন্নত দেশ গুলি বেশি ক্ষতি পুরণ দিবে… এর মধ্যে কয়েকটি দেশের ভাব এরকম যা করছি ত করছি দরকার হলে আরও করব , আমার টাকার দরকার … আর কিছু দেশ আছে বিশাল বানিজ্যের ধান্ধায় , তারা টেকনোলজি বিক্রি করতে চায় , অর্থাৎ কার্বন নিঃসরণ কমাতে এখন আমাদের উন্নত প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হতে হবে … আবার কেউ কেউ মিনমিনে গলায় বলছে, এত বিশাল ফান্ড দেয়া কতটুকু সম্ভব আর কতটুকুই বা তারা টেকসই বাস্তবায়ন করতে পারবে যখন এসব তহবিলের অনেক শর্ত থাকবে…
এই ঢামাঢোল এ মনে পড়ে গেলো ২০০৯ সালে সাইক্লোন আইলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ গুলো এক দশকেও তাদের বাস্তভিটা তে ফেরত যেতে পারেনি, বাধের উপরই জীবন পার করে দিচ্ছে … এটা কি জলবায়ু পরিবর্তনের কারনণ নাকি আমাদের খাসলতের কারনণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না ।।
যাই হোক স্মরণ কালের সেরা জলবায়ু সম্মেলন গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ এ সম্পন্ন হয়েছে , এবং এই সন্মেলন এ রেকর্ড ১০০,০০০ মানুষ বা তার বেশি কিছু অংশগ্রহন করেছে , এর পরেই অবস্থান করছে ইজিপ্ট – কপ ২৭, প্রায় ৫০,০০০ ও ইউকে-গ্লাসগো কপ ২৬ প্রায় ৩৮,০০০… আমি তিনটি ওরশ ই দেখেছি, মহা ভাগ্যবান…
অনেকের মতো আমার ও একটা প্রশ্ন Does all this showboating to achieve anything or is it just a talk shop??