বাংলাদেশের হাওর- প্রেক্ষিত ও উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক আলোচনা
এসোসিয়েটস ফর ইনোভেটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট (এআইআরডি) মূলত একটি গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে গবেষণামূলক কাজ করে থাকে। এআইআরডির একটি ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম হচ্ছে এনডিসিয়া। মূলতঃ এনডিসিয়ার উদ্যোগে উন্নয়ন আলোচনা শীর্ষক এই আলাপচারিতার (টকশো) আয়োজন করা হয়েছে। আজকের আলোচ্য বিষয় বাংলাদেশের হাওরঃ প্রেক্ষিত ও উন্নয়ন ভাবনা। বাংলাদেশের হাওরঃ প্রেক্ষিত ও উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক আলোচনায় অতিথি হিসেবে জুম লিংকে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন ড. মোখলেসুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) ঢাকা বাংলাদেশ এবং ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমান, রিসার্চ এসোসিয়েট এগ্রিকালচারাল এন্ড রিসোর্স ইকোনোমিক্স ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ান কানাডা। আলোচনাটির সঞ্চালনায় ছিলেন মাসুদ সিদ্দিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসোসিয়েটস ফর ইনোভেটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট (এআইআরডি) লিমিটেড।
মাসুদ সিদ্দিকঃ হাওর কি? হাওর বলতে আমরা আসলে কি বুঝি? হাওর সম্পর্কে একটু সংক্ষিপ্ত ধারণা দিন।
ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমানঃ হাওর বলতে আমরা বুঝি ভূমিতে যেসব জলাভূমি আছে সেসব জলাভূমিকে। এটাকে আমরা দুইভাবে ভাগ করতে পারি- যেমন, ওয়াটারশেড এবং ওয়টারল্যান্ড। ওয়াটারশেড হচ্ছে নদী, খাল-বিল যেখানে পানি চলমান অবস্থায় থাকে। আর ওয়টারল্যান্ড বা জলাভূমি হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পানি যেখানে স্থির অবস্থায় থাকে, সেটা হতে পারে ঋতুভিত্তিক বা কয়েক বছরের জন্য বা অনেক লম্বা সময়ের জন্য। আমাদের দেশে যেটাকে আমরা হাওর বলি সেখানে পানি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জমা অবস্থায় থাকে অর্থ্যাৎ প্রাকৃতিক রিজার্ভারের মতো। যেমন আমরা ভারতের সাথে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হাওর দেখতে পাই আবার বাংলাদেশের মূল ভমিতেও অনেক ধরনের বিল এবং জলাশয় আছে। তবে মূলত সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে যে ধরণের জলাভ‚মি আছে সেগুলোকেই হাওর বলা হয়। এই হাওর মূলত আসাম এবং মেঘালয় থেকে নদী, ঝরণা বা অন্যান্য ওয়াটারশেড হতে যে পানি প্রবেশ করে তা জমা হয়ে থাকার জন্য প্রাকৃতিকভাবেই এখানে কতগুলো নীচু অঞ্চলের সৃষ্টি হয় যেগুলোকে হাওর বলা হয়। সেখানে পানি একটা সময় পর্যন্ত যেমন বর্ষাকালে জমা থাকে আবার কিছু কিছু অংশে সারা বছরই পানি থাকে আর বাকী অংশগুলো সাধারণত শুকিয়ে যায়, এটাই মূলত হাওরের বৈশিষ্ঠ্য। এই যে পানি একদিক থেকে নদী হয়ে প্রবেশ করছে এবং নদী হয়েই আবার বের হয়ে যাচ্ছে আর মাঝখানে যে জমাকৃত অবস্থায় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকছে সেটাই হচ্ছে হাওর।
ড. মোখলেসুর রহমানঃ ড. তৌহিদুর রহমান হাওর সম্বন্ধে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আসলে হাওর সম্পর্কে অনেকে অনেকভাবে বুঝে থাকে। যেমন বলা হয়ে থাকে হাওর বিস্তীর্ণ একটা নিচু এলাকা যেটা কোনো একসময় পৃথিবীর টেকটনিক মুভমেন্টের ফলে তৈরী হয়েছিল এবং জায়গাটা নিচু হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের সাতটা জেলা যেমন নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা। নীচু জায়গায় অবস্থিত হওয়ার কারণে এখানে বছরের ৫/৬ মাস পানি থাকে এবং বাকি ৫/৬ মাস শুকনো থাকে। তবে হাওর হচ্ছে মাদার ফিশারিজ। এতো বিস্তীর্ণ জলাভূমি বর্ষাকালে যে একটা সাগরের মতো হয়ে যায় তাই অনেকে বলে যে সাগর থেকেই হাওর জিনিসটা আসছে। বাংলাদেশে হাওর আছে যা দেশের বড় সম্পদ। এসব হাওরের জলজ বৃক্ষ (সোয়াম ফরেস্ট) বা হিজল করচের বাগান এটা কিন্তু বাংলাদেশের আর কোথাও এভাবে নেই।
মাসুদ সিদ্দিকঃ বাংলাদেশে একটা দ্বিধা (কনফিউশান) আছে যে, সরকারিভাবে বলা হয় ৩৭৩টি আর বিভিন্ন লিটারেচারে ৪১৩টির বেশি হাওর এর উল্লেখ আছে। বাংলাদেশে কতটি হাওর আছে এবং কোন সংখ্যাটা সঠিক?
ড. মোখলেসুর রহমানঃ বাংলাদেশের ওয়াটারল্যান্ড নিয়ে অনেক বছর ধরেই কোনো ইনভেন্টরি হয়নি। ২রা ফেব্রুয়ারী বিশ্ব হাওর দিবস। ৩০ বছর আগে যখন সিএনআরএস কাজ শুরু করেছিল তখন অবসরপ্রাপ্ত ফিশারিজের সেক্রেটারি ড. ইউসুফ আলী সাহেব বলেছিলেন এত ডাটা যে ব্যবহার করা হচ্ছে, এতগুলো জলাশয় আছে, আসলে এতকিছু তো নেই। অনেকগুলোই রূপান্তরিত (কনভার্টেড) হয়ে গেছে, অনেক পেরিনিয়াল ওয়াটারল্যান্ডগুলো সিজনাল গয়ে গেছে। এখন যদি ন্যাশনাল ইনভেন্টরি না করা হয় তাহলে সঠিক হিসাব আসবেনা। ড. ইউসুফ আলী কিন্তু ৩০ বছর আগে এটা বলেছিলেন অথচ এখনো এটা হয়নি। কিছু ইনভেন্টরি করা হয়েছিলো যেমন, হাকালুকি হাওরে ছোটবড় মিলিয়ে ২০০টির মতো ওয়াটারল্যান্ড আছে। সেটাও করা হয়েছিলো প্রায় ১৫ বছর আগে কিন্তু যেভাবে ভরাট (সেডিমেন্টেশন) হচ্ছে অনেকগুলো ছোট ছোট বিল হাওরের ভিতরে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। সুতরাং সঠিক হিসাব বলা কঠিন।
ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমানঃ আসলে কতটি হাওর আছে এটা স্পষ্ট করে বলা খুবই কঠিন। ড. মোখলেসুর রহমান যেটা বলেছেন, এ বিষয়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। হাওরের পরিবেশ বাঁচাতে হবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাওর নিয়ে ইনভেন্টরি শুরু করতে হবে। বাংলাদেশে যতগুলোই হাওর আছে এইসব হাওর সম্পদ রক্ষা করা সকলের দ্বায়িত্ব।
মাসুদ সিদ্দিকঃ হাওরের পরিবেশ ব্যবস্থা, হাওরের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, হাওরের ফসল, মৎস্য সম্পদ, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য অনেক সরকারি সংস্থা, এনজিও বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করে থাকে। তবে দেখা যায় যে তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, এই যে সমন্বয়হীনতা সেটা কিভাবে কাটিয়ে উঠা যায়?
ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমানঃ এটা আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ত্বাথিকভাবে যদি বিষয়টা দেখা হয় তাহলে হাওরের গভর্নেন্সের মূল চ্যালেঞ্জগুলো জানতে হবে। হাওর নিয়ে যারা কাজ করে যেমন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফিশারিজ ডিপার্টমেন্ট বা অন্য যে এজেন্সি আছে এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে যারা হাওরের উন্নয়ন কাজ করে তাদের মধ্যে কাজের সমন্বয় থাকা দরকার। এটা হতে হলে সরকারকে প্রথমেই হাওর উন্নয়ন নিয়ে যে ডিপার্টমেন্টগুলো কাজ করে তাদের নিয়ে একটা সমন্বিত পরিকল্পপনা করতে হবে, যাতে প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান রুলস এন্ড রেসপনসিবলিটি সম্পর্কে জানতে পারে এবং এতে করেই কাজের সমন্বয় করা যাবে।
মাসুদ সিদ্দিকঃ এ প্রসঙ্গে ড. মোখলেসুর রহমানের নিকট হতেও জানবো যেমন গভর্ণমেন্ট এজেন্সি, বিভিন্ন এনজিও বা আন্তর্জাতিক সংস্থা তারা যে প্রকল্প বস্তবায়ন করছে এগুলো সবই আলাদাভাবে হচ্ছে, কারো সাথেই কারোর যোগাযোগ ও সমন্বয় দেখা যায় না। এখন এ সম্পর্কে কমন আমব্রেলা ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে কিছু বলুন, কি মনে হয় কমন আমব্রেলা হাওরের সকল কাজকে একটা সমন্বয়ের মধ্যে নিয়ে আসতে পারবে কি?
ড. মোখলেসুর রহমানঃ এটা আসলে খুব ক্রিটিক্যাল ইস্যু। এটা কিভাবে হবে, কারণ প্রত্যেকট এজেন্সির একটা নিজস্ব সেক্টরাল পলিসি আছে আর সেই পলিসিগুলোর ভিতরে এলাইনমেন্ট নেই। যেমন, পরিবেশ নীতিতে বলা আছে স্থানীয় জনগণ এবং মৎসজীবী মিলে একটা বিল সামাজিকভাবে ব্যবহার করবে আর জলমহাল নীতিতে বলা আছে শুধুমাত্র মৎস্যজীবী যাদের মৎসজীবী সমিতির কার্ড আছে তারাই জলমহাল এর অধিকার পাবে অন্য কেউ পাবে না। কিন্ত এখানে ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী লোকদের একটা দখলদারিত্ব আছে যারা এটা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং তাদের সাথে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠান বা অন্য প্রতিষ্ঠানেরও সংযোগ আছে, ফলে সেখানকার মৎস্যজীবীরা তাদের সাথে পেরে উঠেনা। যাইহোক, সমন্বয় করাটা দরকার কিন্তু কোনোভাবেই হচ্ছেনা, কবে হবে সেটাও বলা মুশকিল।
মাসুদ সিদ্দিকঃ অতি সম্প্রতি হাকালুকি হাওরে ফিশারিজ ডিপার্টমেন্ট একটি মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরী করেছে এবং আরেক ডিপার্টমেন্ট খাল খননের নামে এই মৎস্য অভয়াশ্রমের পানি ড্রেন আউট করে ফেলছে। এই যে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এটা হাওরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না ড. তৌহিদুর রহমান বিষয়টা একটু বলবেন?
ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমানঃ এটা আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে দুটি জিনিস দেখা যায় একটা হচ্ছে নীতিমালা তৈরী আরেকটা হচ্ছে নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ। মূল সমস্যা হচ্ছে নীতিমালা তৈরীর সময় ক্রস-সেক্টরালের দিকে মনোযোগ দেয়া হয় না। আর নীতিমালার প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেহেতু সাপ্লিমেন্ট থেকে সেই নির্দেশনা থাকেনা তখন মাঠ পর্যয়ের কর্মীরাও (গ্রাউন্ড লেভেলের এমপ্লোয়াররা) জানেনা তাদের আসলে কি করা উচিত। তাদের এই নির্দেশনা না থাকার কারণে দেখা যায় তাদের যে কার্যক্রম আছে সেগুলোতে মতবিরোধ (কনফ্লিক্ট) তৈরী হয়, যার কারণেই মূলত সমস্যটা হয়।
মাসুদ সিদ্দিকঃ আরেকটা বিষয় তুলে ধরি, অবগত আছেন যে পরিবেশ অধিদপ্তর ১৩টা ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করেছে তার মধ্যে হাকালুকি ও টাংগুয়ার হাওরও আছে, ড. মোখলেসুর রহমান ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া বাড়ানো নাকি পুরো হাওর অঞ্চলকেই ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করা প্রয়োজন বলে মনে হয়?
ড. মোখলেসুর রহমানঃ ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর একটা রুলস আছে। হাকালুকি হাওরে প্রায় ১৩/১৪ বছর পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন ব্যানারে অনেক কাজ করেছে যার অনেক কিছুই এখন নেই। এই হাওরের বর্তমান যে অবস্থা অন্য হাওরের সাথে তুলনা করলে এখন কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তাহলে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করে লাভটা কি হচ্ছে। আগের মতই ইজারা দেওয়া চলছে, সেচ দিয়ে মাছ ধরা চলছে, সোয়াম ফরেস্ট ধ্বংস করা হচ্ছে, ক্ষতিকর জালের ব্যবহার হচ্ছে। আর এসবের প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক। কারণ ই.সি.এ ম্যানেজমেন্টের তেমন কোনো গুরুত্ব মাঠ পর্যায়ে নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের যে শক্ত ভূমিকা মাঠ পর্যায়ে থাকা দরকার সেটা যদি না থাকে সেক্ষেত্রে মনে হয়না যে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করা বা না করার মধ্যে কোনো পার্থ্যক্য আছে।
মাসুদ সিদ্দিকঃ আরেকটা বিষয় হলো ইদানীং হাওরে মাছ চাষ (ফিশ ফার্মিং) হচ্ছে যার ফলে হাওরের প্রকৃত পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। এতে করে কি দেশীয় মাছের আবাস বা হাওরের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেনা, ড. মোখলেসুর রহমান বিষয়টা কিভাবে দেখছেন?
ড. মোখলেসুর রহমানঃ হ্যাঁ এটা তো আসলে ভূমি ব্যবহারের বিষয়। দেশে ভ‚মি ব্যবহার নীতি আছে কিন্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তেমন কার্যকারিতা নেই। হাওরে ইচ্ছেমতো পুকুর খনন করা যাবেনা এটা যদি আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো তাহলে সেটার একটা ম্যাকানিজম থাকতো। এগুলো দেশীয় মাছের জন্য বড় ধরণের হুমকি, কারণ এর ফলেই দেশীয় মাছের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, হাওরের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কিশোরগঞ্জে হাওরে যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে এখানেও কিন্তু পরিকল্পনার অভাব ছিলো, এইযে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা মূলত একারণেই হয়েছে, এটাও হাওরের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্রের জন্য বড় ধরণের হুমকি। হাওরের ইকোসিস্টেমকে বাঁচানোর জন্য আসলে এই বিষয়গুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার
মাসুদ সিদ্দিকঃ আলোচনার শেষ প্রান্তে চলে এসেছি, ড. তৌহিদুর রহমানকে বলবো খুব অল্প কথায় ২/১টা সুপারিশ করুন হাওর উন্নয়নে কি করা দরকার?
ড. এইচ এম তৌহিদুর রহমানঃ হাওর উন্নয়নে সৃষ্টিশীল কথা অনেক কিছুই আছে, হাওরের ক্ষেত্রে অনেক গল্প আছে যা সাধারণত শুনতে পাওয়া যায় না। যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের কথা যে বলা হয় এর ফলে হাওরের লোকজন কিভাবে টিকে আছে? তাদের নিজস্ব ইনোভেশন সিস্টেমের কারণেই কিন্তু তারা টিকে আছে। এই বিষয়ে দুটি কাজ করতে হবে একটি হচ্ছে ইনোভেশনকে জানতে হবে আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ইনোভেশনের এনভাইরনমেন্ট, সেটাও মেইন্টেইন করতে হবে। আরেকটা বিষয় যেটা বললেন যে হাওরে মাছ চাষ হচ্ছে এখানে আবার ইজারাও দেওয়া হচ্ছে। এই বিয়য়গুলো সরকারকে কঠোরভাবে দেখতে হবে। ইজারা দেওয়া বলেন আর হাওরে মাছ চাষ বলেন এগুলো বন্ধ করতে হবে। ভ‚মি মন্ত্রনালয় আর পরিবেশ মন্ত্রনালয় মিলে এগুলো কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। আর মূল কাজ হচ্ছে পলিসি ফেইলর যাতে না হয় একদম উপর লেভেল থেকে ফিল্ড লেভেল (মাঠ পর্যায়) পর্যন্ত সেটার দিকে নজর রাখতে হবে।
মাসুদ সিদ্দিকঃ মোদ্দাকথা হচ্ছে যেটা দু’জনেই বললেন, হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং এদেরকে ক্ষমতায়িত করতে হবে। আর সেটাই হলো আগামী দিনের নতুন চ্যালেঞ্জ। সকলকে ধন্যবাদ।